সিডনিতে যুবদলের বৈশাখী উৎসবে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি
প্রকাশিত : ১৯:১২, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৯:১৪, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা, ইসরায়েলি আগ্রাসন ও বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং নির্যাতিত মজলুমদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, অস্ট্রেলিয়া শাখার ঈদ পুনর্মিলনী ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) আয়োজিত অনুষ্ঠানের আগে ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র নাগরিকদের উপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এক সংহতি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। “Free Palestine” স্লোগানে মুখরিত হয় সিডনির ওয়ালী পার্ক। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনে নির্যাতিত মানুষদের জন্য দোয়া করা হয়।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, প্রীতি আলোচনা ও খাবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবটি রূপ নেয় এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়। তবে উৎসবের এই উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে স্পষ্ট ছিল বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা, প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠ।
এদিকে উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জনাব মো: রাশেদুল হক বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিস্তার ও সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করার পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে প্রবাসীদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুবদল অস্ট্রেলিয়ার এ আয়োজন আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামে নতুন আশার আলো সঞ্চার করেছে। জাতীয়তাবাদী আদর্শ নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম অপরিহার্য। এ ধরনের আয়োজন তরুণদের দলের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার ২০২০ সালের এক স্বৈরাচারী আদেশের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বিএনপি নেতাকর্মীরা—যারা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, নির্যাতন, হামলা-মামলার শিকার হয়ে প্রবাসে রিফিউজি জীবন যাপন করছেন—তাদের এখনও অনেকের পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে না। এটি মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অনতিবিলম্বে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি নাগরিককে পাসপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশন, ক্যানবেরার উদ্দেশে লং-মার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক (যুগ্ন সম্পাদক পদমর্যাদা) মোহাম্মদ ফেরদৌস অমি বলেন, "ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলেও বাংলাদেশে এখনো মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় নি। দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে আমরা সুদূর প্রবাস থেকেও সক্রিয় ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির সুসংগঠিত কাঠামো বাংলাদেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে, ইনশাআল্লাহ।"
সভাপতির বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়া যুবদলের আহবায়ক মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সকল দেশপ্রেমিক বাংলাদেশীকে জানাই বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ ও ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র মজলুম জনতার উপর ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর বর্বরতা ও গনহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন "বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের বিকল্প নেই”
একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে বক্তারা ফিলিস্তিনসহ সারাবিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে সবাইকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অস্ট্রেলিয়া যুবদলের সদস্য সচিব মো. ফারুক হোসেন খান এবং অস্ট্রেলিয়া বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আবিদা সুলতানা। বক্তব্য রাখেন ক্যান্টরবেরি-ব্যাংকস্টাউনের ডেপুটি মেয়র কার্ল সালেহ, কাউন্সিলর শিরিন আক্তার, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম শফিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান তুহিন, সদস্য সচিব মো. জাহিদুর রহমান, উপদেষ্টা আরিফুর রহমান, সিডনি বিএনপি নেতা আরমান ভূঁইয়া, যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম শিবলীসহ দলীয় ও প্রবাসী অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, জয় আহমেদ সুলতান, ইলিয়াস কাঞ্চন শাহীন, প্রফেসর ড. মাহফুজ আশরাফ, মোস্তাফিজুর রহমান লাবু, নাদিম ফারুকীসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও অস্ট্রেলিয়া বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসএস//
আরও পড়ুন